প্রতিদিন ডিম খাওয়া ভালো না মন্দ?-Health Tips
প্রতিদিন ডিম খাওয়া ভালো না মন্দ?
প্রতিদিন ডিম খাওয়া ভালো না মন্দ? |
ডিম একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার, যা প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের একটি চমৎকার উৎস। অনেকেই প্রতিদিন ডিম খাওয়ার পরামর্শ দেন, আবার অনেকেই মনে করেন এতে স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকতে পারে। তাই প্রতিদিন ডিম খাওয়া ভালো না মন্দ, তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে কিছু বিভ্রান্তি রয়েছে। এই প্রশ্নের উত্তর পেতে, আসুন জেনে নিই ডিমের উপকারিতা, সম্ভাব্য ক্ষতিকর দিক এবং প্রতিদিন এটি খাওয়ার প্রভাব।
### ডিমের পুষ্টিগুণ
ডিমে রয়েছে প্রোটিন, ভিটামিন এ, ডি, ই, বি১২, কোলিন, সেলেনিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরের জন্য অনেক উপকারী। একটি ডিমে প্রায় ৬ গ্রাম প্রোটিন থাকে, যা শরীরের মাংসপেশি গঠনে সাহায্য করে এবং কর্মশক্তি বাড়ায়। এছাড়া, ডিমের কুসুমে প্রচুর কোলিন থাকে, যা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে এবং স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে।
### প্রতিদিন ডিম খাওয়ার উপকারিতা
#### ১. প্রোটিনের উৎস
ডিমে উচ্চমানের প্রোটিন থাকে, যা শরীরের মাংসপেশির গঠনে সহায়তা করে। প্রোটিন মেটাবলিজমকে বাড়াতে সাহায্য করে এবং দীর্ঘ সময় ধরে পেট ভরা রাখে, ফলে অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে।
💥আরো পড়ুন :
👉প্রতিদিন সকালে এক কোয়া রসুন খাওয়ার ১০ উপকারিতা
👉 বিশ্বের সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর ৫টি খাবার
👉 The easiest recipe to make pizza in the oven
👉ই পাসপোর্ট চেক করার নিয়ম নতুন আপডেট
#### ২. হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী
ডিমে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়ক। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে প্রতিদিন একটি ডিম খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।
#### ৩. চোখের জন্য উপকারী
ডিমের কুসুমে থাকা লুটিন এবং জেক্সানথিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে এবং ছানি পড়ার ঝুঁকি কমাতে সহায়ক।
#### ৪. ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার হিসেবে ডিম দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ফলে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণের প্রবণতা কমে, যা ওজন কমাতে সহায়ক।
### প্রতিদিন ডিম খাওয়ার ক্ষতিকর দিক
ডিমের অনেক উপকারী দিক থাকলেও, প্রতিদিন ডিম খাওয়ার কিছু নেতিবাচক দিকও রয়েছে, বিশেষ করে যারা স্বাস্থ্যগত কারণে সাবধান থাকতে চান তাদের জন্য।
#### ১. কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেশি
একটি ডিমের কুসুমে প্রায় ১৮৬ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল থাকে, যা শরীরের এলডিএল কোলেস্টেরল বাড়াতে পারে। এলডিএল কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে হার্টের সমস্যার ঝুঁকি বাড়তে পারে। তবে সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে যে ডিম থেকে প্রাপ্ত কোলেস্টেরল সবার শরীরে একরকম প্রভাব ফেলে না।
#### ২. অ্যালার্জির ঝুঁকি
অনেকেই ডিমের প্রতি অ্যালার্জি থাকতে পারে। বিশেষ করে ছোট শিশুদের মধ্যে ডিম খাওয়ার ফলে চুলকানি, ত্বকের ফুসকুড়ি বা পেটে ব্যথার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
#### ৩. খাবারের ঝুঁকি
ডিম যদি ঠিকমত রান্না না হয় তবে এতে থাকা সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ ঘটাতে পারে, যা খাদ্যে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। এজন্য ডিম সঠিকভাবে রান্না করে খাওয়া উচিত।
### কাদের প্রতিদিন ডিম খাওয়া উচিত নয়?
- **উচ্চ কোলেস্টেরলযুক্ত ব্যক্তিরা:** যাদের রক্তে কোলেস্টেরল মাত্রা বেশি, তাদের জন্য প্রতিদিন ডিম খাওয়া স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হতে পারে। তবে, ডাক্তার বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ অনুযায়ী সীমিত পরিমাণে ডিম খাওয়া যেতে পারে।
- **ডায়াবেটিস রোগীরা:** কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বেশি পরিমাণে ডিম খাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তবে, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে ডিম খাওয়া নিরাপদ।
### প্রতিদিন কতটুকু ডিম খাওয়া উচিত?
বিশেষজ্ঞরা সাধারণত সুস্থ প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য দিনে একটি সম্পূর্ণ ডিম খাওয়ার পরামর্শ দেন। তবে স্বাস্থ্যবান ও সক্রিয় জীবনযাত্রায় অভ্যস্তদের জন্য দিনে ২টি ডিম খাওয়া যেতে পারে। যদি কেউ প্রতিদিন ডিম খেতে চান, তবে একটি পুরো ডিম ও একটি ডিমের সাদা অংশ খেতে পারেন। ডিমের সাদা অংশে কোলেস্টেরলের পরিমাণ নেই, তাই এটি হৃদরোগীদের জন্য নিরাপদ।
💥আরো পড়ুন :
👉প্রতিদিন সকালে এক কোয়া রসুন খাওয়ার ১০ উপকারিতা
👉 বিশ্বের সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর ৫টি খাবার
👉 The easiest recipe to make pizza in the oven
👉ই পাসপোর্ট চেক করার নিয়ম নতুন আপডেট
### উপসংহার
প্রতিদিন ডিম খাওয়া অধিকাংশ মানুষের জন্য স্বাস্থ্যকর, তবে কিছু মানুষের ক্ষেত্রে এটি পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। ডিম একটি পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার এবং এটি নিয়মিত খাদ্যতালিকায় থাকলে শরীরের অনেক উপকার হতে পারে। তবে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল বা ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে ডিমের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। সঠিক পরিমাণে ডিম খেলে এটি দেহের পুষ্টি চাহিদা পূরণে এবং সার্বিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে সহায়ক।