শবে কদরের নামাজ কত রাকাত | শবে কদরের নামাজের নিয়ম ও দোয়া | Shobe Kodorer Rat
শবে কদরের নামাজ কত রাকাত – শবে কদরের নামাজের নিয়ম ও দোয়া
![]() |
শবে কদরের নামাজ কত রাকাত | শবে কদরের নামাজের নিয়ম ও দোয়া |
শবে কদর প্রতিটি মুসলিমের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ রাত। তাই, একজন মুসলিম হিসেবে, আমাদের প্রত্যেকের জানা উচিত শবে কদরের নামাজে কত রাকাত এবং শবে কদরের জন্য দোয়া। তাই, শবে কদর সম্পর্কে আরও জানতে আমাদের আজকের প্রবন্ধটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
শবে কদরের নামাজে কত রাকাত রয়েছে
শবে কদরের নামাজে কত রাকাত এবং শবে কদরের জন্য দোয়া সম্পর্কে আজকের প্রবন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। এছাড়াও, আজকের প্রবন্ধটি পড়ে আপনি শবে কদরের ফজিলত, কদরের তাসবীহ, লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস, শবে কদরে কী করা উচিত এবং কী করা উচিত নয় এবং শবে কদর সম্পর্কে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে পারবেন। তাহলে আসুন বিস্তারিতভাবে শুরু করি।
শবে কদরের ফজিলত
'শবে কদর' একটি ফার্সি শব্দ। এর আরবি রূপ হল লাইলাতুল কদর। শবে কদর বা লাইলাতুল কদর অর্থ মহিমান্বিত বা সম্মানিত রাত বা পবিত্র রাত। পবিত্র রমজান মাসে এমন একটি রাত আছে যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম এবং সেই রাতটিই হলো কদরের রাত। প্রতিটি মুসলিমের জন্য, এই কদরের রাত অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ একটি রাত। কদরের রাতের ফজিলত সম্পর্কে জানুন।
কদরের রাত প্রতিটি মুসলিমের জন্য অত্যন্ত বরকতময় একটি রাত। এই রাতে ইবাদত হাজার মাসের ইবাদত করার চেয়েও উত্তম। বিভিন্ন হাদিসে বলা হয়েছে যে, যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে কদরের রাতে আমল করবে, তার পূর্ববর্তী সমস্ত পাপ ক্ষমা করা হবে।
পবিত্র কুরআন আমাদের স্পষ্ট নির্দেশনা যা রমজান মাসে কদরের রাতে নাজিল হয়েছিল। এই রাতের মাধ্যমেই আমরা আমাদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ নির্দেশনা হিসেবে পেয়েছি।
কদরের রাতে করা দোয়া আল্লাহ তাআলা কবুল করেন। এই রাতে, আল্লাহ তাআলা বান্দা যা চায় তাই দান করেন।
শবে কদরের রাতে ফেরেশতাগণ বরকত, রহমত এবং শান্তি নিয়ে পৃথিবীতে অবতরণ করেন। এই রাত প্রতিটি মুমিনের জন্য রহমত এবং আশীর্বাদ।
এই রাত আমাদের সকলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই রাতের মাধ্যমে আমরা আমাদের পূর্ববর্তী পাপ ধুয়ে ফেলতে পারি এবং সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে প্রিয় হতে পারি।
- গ্যাসের ঔষধ খাওয়ার নিয়ম: বিস্তারিত গাইড | Health Tips Bangla
- কোমর ব্যাথা সারানোর সহজ উপায় এবং কোমর ব্যথা বিভিন্ন কারণ ও তার প্রতিকার: দ্রুত সমাধান ও প্রাকৃতিক উপায়
- জেনে নিন তৈলাক্ত ত্বকের জন্য প্রাকৃতিক ত্বকের যত্নের টিপস । Natural Skin Care Tips for Oily Skin
শবে কদরের জন্য দুআ
শবে কদর বা লাইলাতুল কদরের রাত অত্যন্ত সম্মানিত একটি রাত। রমজানের শেষ দশ দিনের বিজোড় রাতগুলির মধ্যে একটি হল লাইলাতুল কদরের রাত। এই রাতকে লাইলাতুল কদর বলা হয় কেন: যে ব্যক্তির পূর্ববর্তী কৃতকর্মের কারণে ইসলামে কোন সম্মান বা মর্যাদা নেই, কিন্তু যদি সেই ব্যক্তি লাইলাতুল কদরের রাতে তওবা করে এবং ইবাদত করে, তাহলে এই রাতের মাধ্যমে সে একজন সম্মানিত ও মর্যাদাবান ব্যক্তি হয়ে ওঠে। এছাড়াও, পবিত্র কুরআন এই রাতে নাজিল হয়েছিল, যে কারণে এই রাতটি আরও সম্মানিত।
![]() |
শবে কদরের নামাজ কত রাকাত | শবে কদরের নামাজের নিয়ম ও দোয়া |
আমরা নামাজ, যিকির-তসবিহ এবং বিভিন্ন দোয়ার মাধ্যমে শবে কদরের ইবাদত করতে পারি। আমাদের অনেকেই ভাবি শবে কদরের রাতে কোন কোন দোয়া পাঠ করা উচিত। তাই শবে কদরের দোয়া সম্পর্কে জেনে নিন।
আরও পড়ুন: -
- স্বপ্নদোষ হলে কি রোজা ভেঙ্গে যায় |দিনের বেলায় স্বপ্নদোষ হলে রোজার কোনো ক্ষতি হবে কি?Islamic Life
- তারাবির নামাজের দোয়া । তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি নফল
- রোজা কবে থেকে শুরু ২০২৫: সম্পূর্ণ সময়সূচি, প্রস্তুতি ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য | When does Ramadan start in 2025?
শবে কদরের রাতে, বেশি বেশি করে পড়া উচিত, "আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুন তুহিব্বুল আ'ফওয়া ফা'ফু আন্নি"। এই দোয়ার অর্থ হল - হে আল্লাহ! আপনি সত্যিই ক্ষমাশীল। আপনি ক্ষমা করতে ভালোবাসেন। তাই আমাকে ক্ষমা করুন। (সুনান তিরমিযী: ৩৫১৩)
উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রাঃ) নবী (সাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলেন - হে আল্লাহর রাসূল, যদি আমি জানি কোন রাত লাইলাতুল কদর, তাহলে সেই রাতে আমি কী বলব? জবাবে নবী (সাঃ) এই দোয়া পাঠ করতে বললেন। শবে কদরের রাতে এই দোয়া পাঠ করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ।
এছাড়াও, পবিত্র কুরআনে ক্ষমার জন্য বিভিন্ন দোয়া রয়েছে যেমন-
রাব্বানা আঘফিরলি ও লিওলিদাইয়া ও লিলমু'মিনীনা ইয়াওমা ইয়াকুমুল হিসাব'। অর্থ - হে আল্লাহ! যেদিন হিসাব কায়েম হবে সেদিন আমাকে, আমার পিতামাতাকে এবং মুমিনদেরকে ক্ষমা করো। (সূরা ইব্রাহিম: আয়াত ৪১)
রাব্বানা জালামনা আংঘফুসানা ওয়া ইল্লাম তাগফিরলানা ওয়া তারহামনা লানাকুনান্না মিনাল খাসিরিন"। অর্থ হে আমার আল্লাহ! আমরা নিজেদের উপর জুলুম করেছি। যদি তুমি আমাদের ক্ষমা না করো এবং আমাদের প্রতি দয়া না করো, তাহলে আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হব। (সূরা আরাফ: আয়াত ২৩)। (আরবি উচ্চারণ দেখে দোয়াগুলো পড়ুন)
তাই, শবে কদরের রাতে বেশি বেশি ক্ষমার দোয়া পাঠ করো। এর সাথে সাথে, সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে তোমার ইচ্ছাগুলো পেশ করো। ঘন ঘন নামাজের মাধ্যমে, আল্লাহ রাব্বানা মুমিনকে পাপ থেকে মুক্তি দেবেন এবং তাকে নাজাত দান করবেন।
শবে কদরের নামাজ কত রাকাত
শবে কদরের রাত সকল বান্দাদের ইবাদত বন্দেগির রাত। এ রাতে ইবাদতবন্দেগির মাধ্যমে মহান আল্লাহ তায়ালাকে খুশি করা যায়। আর এজন্য বেশি বেশি নফল নামাজের মাধ্যমে মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। তবে শবে কদরের নামাজ নিয়ে আমাদের সমাজে অনেকের কিছু ভ্রান্ত ধারনা রয়েছে। অনেকেই সঠিকভাবে জানে না শবে কদরের নামাজ কত রাকাত। তো চলুন বিস্তারিত জেনে নিই।
![]() |
শবে কদরের নামাজ কত রাকাত | শবে কদরের নামাজের নিয়ম ও দোয়া |
শবে কদরের নামাজের নির্ধারিত কোনো পদ্ধতি নেয়। এ নামাজ নির্ধারিতভাবে কত রাকাত সেটির কোনো সহিহ হাদিস নেয়। আমরা অনেকেই মনে করে থাকি শবে কদরের নামাজে প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পর একটি সুরা এতবার পড়তে হবে দিত্বীয় রাকাতে কম পড়তে হবে। এটি সম্পূর্ন ভুল একটি পদ্ধতি এবং মানুষের মনগড়ানো।
শবে কদরের রাতে নফল নামাজ যেমন ২ রাকাত করে পড়বেন। কারণ এ রাতে সওয়াব বেশি বলে নামাজের নির্ধারিত কোনো রাকাত সংখ্যা মনে করা হয় না তবে আপনি যত রাকাত খুশি দুই রাকাত, দুই রাকাত করে পড়বেন।
এ নামাজের সঠিক পদ্ধতি হলো অন্য নামাজ আপনি যে নিয়মে পড়েন ঠিক সে নিয়মে পড়া। তবে এ নামাজ অত্যন্ত সুন্দর ও মনোযোগ সহকারে পড়বেন এবং কেরাত, রুকু ও সেজদা লম্বা করবেন। শবে কদরের রাতের নফল নামাজগুলোতে কেরাত, রুকু ও সেজদা লম্বা করা উত্তম। হাদিসে এ রাতের নফল নামাজ আদায়ে সূরা ফাতিহার পরে নির্ধারিত কোনো সুরা পড়ার কথা বলা হয় নি। সুরা ফাতিহার পরে পবিত্র আল কুরআনের মধ্য থেকে যেকোনো একটি আপনার সুবিধামতো তেলওয়াত করলেই হবে।
নির্দিষ্ট কোনো সুরা দিয়ে যদি শবে কদরের নামাজ পড়াকে কেউ সুন্নাহ মনে করে পড়ে তাহলে তার জন্য এটি এক ধরনের বিদআত হবে। তাই আমরা চেষ্টা করবো শবে কদরের রাতকে সঠিকভাবে সঠিক নিয়মে কাজে লাগানোর।
আরো পড়ুনঃ-
- পবিত্র আশুরা ২০২৫ কবে ও কত তারিখে? আশুরার দিনের ঘটনা ও আশুরার রোজা কয়টি?
- নামাজের সময়সূচি: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | Today Namaz Time
- ম দিয়ে মেয়েদের ইসলামিক নাম এর তালিকা অর্থসহ 2025
তাসবীহ হলো সে বাক্য যার মাধ্যমে মহান আল্লাহ তায়ালার প্রশংসা করা হয়। তাসবীহ পাঠ কারীকে মহান আল্লাহ তায়ালা পচ্ছন্দ করেন এবং তার গুনাহসমূহ মাফ করে দেন। যেকোনো সময় তাসবীহ পড়লে সওয়াব পাওয়া যায়। তাসবীহর ফজিলত অনেক। পবিত্র আল কুরাঅনেও তাসবিহ পাঠের কথা বলা হয়েছে। তাই শবে কদরের রাত যে রাত অধিক মর্যাদসম্পন্ন সে রাতে আমরা তাসবীহ পাঠ করবো। এতে মহান আল্লাহ তায়ালা বান্দার প্রতি অনেক ক্ষমাশীল হবেন।
শবে কদরের রাতে সওয়াব বেশি পেতে হলে বেশি বেশি তাসবীহ পড়তে হবে। আল্লাহর প্রশংসাকারী ব্যক্তিকে মহান আল্লাহ তায়ালা ভালোবাসেন। তাই কদরের রাতে নফল নামাজ ও কুরআন তেলওয়াতের পাশাপাশি তাসবীহ পাঠেও গুরুত্ব দিতে হবে।
সুতরাং আমাদের সবার উচিত কদরের রাত পেলেই আল্লাহর প্রিয় তাসবীহগুলো যেমন-সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লহু ইত্যাদি তাসবীহগুলো বেশি বেশি পড়া উচিত। কুরআন ও হাদিস থেকেও এ তাসবীহগুলো পড়ার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস
লাইলাতুল কদরের রাত হলো পবিত্র আল-কুরআন নাযিলের রাত। যে রাত শবে কদর হবে সেদিনের সন্ধ্যা থেকে ফজর পর্যন্ত পুরো সময় একটি বরকতপূর্ন রাত। আর এ রাত প্রত্যেক মুমিন ব্যক্তির জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা একটি নেয়ামত। এ রাতের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে কুরআন ও হাদিসে সুস্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে। তাই চলুন জেনে নেওয়া যাক লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিসগুলো।
*আয়েশ (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমরা রামজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতে শবেকদর অনুসন্ধান করো। (বুখারি, হাদিস: ২০১৭)
*আবু হুরাইরাহ (রা.) থেকে বর্নিত, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন- যে ব্যক্তি রমজানের রোজা ইমানের সাথে সওয়াবের আশায় পালন করবে তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দেওয়া হয় এবং যে ব্যক্তি ইমানের সাথে সওয়াবের আশায় লাইলাতুল কদরের রাত জেগে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করে। তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দেওয়া হয়। (বুখারি হাদিস: ২০১৪)
*আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্নিত, রসূলুল্লাহ (সা.) বলতেন- তোমাদের মাঝে রমজান মাস এসে উপস্থিত হয়েছে। এ মাস অতি বরকতময় ও কল্যানময়। আল্লাহ তায়ালা তোমাদের উপর এ মাসের রোজা ফরজ করেছেন। এ মাসে জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর শয়তানগুলোকে আটক রাখা হয়। এ মাসে একটি রাত রয়েছে যে রাত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। এ রাতের কল্যান থেকে যে ব্যক্তি বঞ্চিত হলো সে সত্যিই হতভাগা। (সুনানুন নাসায়ী: ২১০৬)
কুরআন ও হাদিসের বর্ণনা মতে শবে কদরের রাত খুবই ফজিলতপূর্ন একটি রাত। এ জন্য রাতটি প্রত্যেক মুসলমানের জন্য খোদা তায়ালার পক্ষ থেকে আসা এক বিশেষ উপহার। বলা হয় যদি কোনো বান্দা এ রাত না পায় আর সে যেন সত্যিই একজন হতভাগা। এজন্য আমাদের সবার উচিত এ রাতে বেশি বেশি এবাদত বন্দেগি করার মাধ্যমে নেক আমল করে আল্লাহর সন্তোষটি অর্জন করা ।
শবে কদরে কী করবেন এবং কী এড়িয়ে চলবেন
শবে কদরের রাত হল সর্বোত্তম রাত। মহান আল্লাহ এই রাতে বান্দার করা আমলগুলো পছন্দ করেন। তবে, মহান আল্লাহকে খুশি করার জন্য, আমাদের অবশ্যই কদরের রাত সঠিকভাবে পালন করতে হবে। অতএব, শবে কদরের রাতে কিছু করণীয় এবং এড়িয়ে চলার বিষয় রয়েছে যা আমাদের মুসলমান হিসেবে মনোযোগ দেওয়া উচিত। তাই আসুন জেনে নেওয়া যাক শবে কদরে কী কী করণীয় এবং এড়িয়ে চলা উচিত।
আরও পড়ুন:-
শবে কদরের রাতে আমাদের অবশ্যই কুরআন ও হাদিস অনুসারে কাজ করতে হবে। এই রাতের ইবাদত সম্পর্কে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে এবং পরিবারের সবাইকে সচেতন করতে হবে।
আমাদের অবশ্যই শবে কদরের রাত মিস না করার বিষয়ে যত্নবান হতে হবে। কারণ আমাদের অনেকেই মনে করেন যে শবে কদরের রাত মানে এই দুটি রাতের যেকোনো একটি, রমজানের ২৭ বা ২৯ তারিখ, কদরের রাত। তবে আমাদের ধারণা ভুল, কারণ অনেক হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে যে, কদরের রাত নির্দিষ্ট নয়। রমজানের শেষ দশ রাতের যেকোনো একটি রাতই কদরে পরিণত হতে পারে। অতএব, বিজোড় রাতে কদর প্রার্থনা করা বুদ্ধিমানের কাজ।
অধিক তওবা এবং ইস্তেগফারের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। এই সবচেয়ে বরকতময় রাতে, আমাদের পাপ থেকে সর্বশক্তিমানের কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা উচিত। আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) কদরের রাতে সর্বাধিক পঠিত দোয়া - আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুং তুহিব্বুল আফওয়া ফা'ফু আন্নি - পাঠ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
কদরের রাত সূর্যাস্তের পরপরই শুরু হয়। অতএব, আমাদের এই সময় থেকেই ইবাদতের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া উচিত। আমাদের বিশেষ মনোযোগ দেওয়া উচিত দুই রাকাত নফল নামাজ, কুরআন তেলাওয়াত, আল্লাহর স্মরণ, আল্লাহর প্রশংসা, দোয়া প্রদান এবং দান-খয়রাত করার দিকে।
শবে কদরের রাতে যেসব কাজ এড়িয়ে চলতে হবে তা হল:
শবে কদরের রাতে সকল ধরণের বিদআত পরিহার করা উচিত। আমাদের অনেকেই আছেন যারা কদরের রাতে কুরআন ও হাদিস অনুসারে সঠিকভাবে আমল করি না। ফলস্বরূপ, এটি সুন্নাত পদ্ধতিতে করা হয় না এবং এটি একটি বিদআতে পরিণত হয়। আর যদি আমরা কোন বিদআত করি, তাহলে আমরা সওয়াব পাব না এবং আমরা পাপে লিপ্ত হব।
শবে কদরের রাতে আমাদের অতিরিক্ত ঘুম এবং বিশ্রাম এড়িয়ে চলতে হবে। অতিরিক্ত ঘুম ত্যাগ করা এবং ব্যস্ত থাকা উচিত। শবে কদরের রাতে ইবাদত করা একজন প্রকৃত মুমিনের কাজ।
আমাদের অবশ্যই খারাপ আচরণ এবং মানুষের সাথে গীবত করা থেকে মুক্ত থাকতে হবে। এগুলো কদরের রাতের ইবাদতকে ধ্বংস করে। এর পাশাপাশি, আমাদের অবশ্যই সকল ধরণের খারাপ আচরণ এবং সকল ধরণের পাপ থেকে সম্পূর্ণরূপে দূরে থাকতে হবে এবং পরবর্তীতে আল্লাহর কাছে এইসব থেকে দূরে থাকার জন্য নির্দেশনা প্রার্থনা করতে হবে।
কদরের রাতে আতশবাজি পোড়ানো, দলবদ্ধভাবে আড্ডা দেওয়া, শব্দ করা ইত্যাদি থেকে বিরত থাকতে হবে।
অতএব, একজন প্রকৃত মুমিনের কাজ হল শবে কদরের রাতে নিষিদ্ধ কাজগুলি এড়িয়ে চলা এবং করণীয় কাজগুলি অনুসরণ করা।
শেষ কথা:
শবে কদরের রাত আমাদের জন্য অত্যন্ত বরকতময় একটি রাত। অতএব, আমরা বেশি বেশি নফল নামাজ, যিকির, তাসবিহ, ইস্তিগফার, দুরূদ এবং কুরআন তেলাওয়াত করে সারা রাত ইবাদত করার চেষ্টা করব। এই রাত আমাদের জন্য আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন এবং সওয়াব অর্জনের একটি মাধ্যম।