ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম -২০২৫, কি কি লাগে ও খরচ কত টাকা(আপডেট) জেনে নিন ধাপে ধাপে


ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম -২০২৫, কি কি লাগে ও খরচ কত টাকা(আপডেট)

ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম -২০২৫
ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম -২০২৫


Introduction:

ই-পাসপোর্ট বর্তমানে আধুনিক নাগরিক জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে। এটি আন্তর্জাতিক ভ্রমণের জন্য সহজ, নিরাপদ এবং দ্রুত সেবা প্রদান করে। ২০২৫ সালে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে চান? আপনি একেবারে সঠিক জায়গায় এসেছেন। পাসপোর্ট করা এখন আগের তুলনায় অনেক সহজ এবং দ্রুত প্রক্রিয়া হয়েছে। ই-পাসপোর্ট সুবিধা আসায় অনলাইনে আবেদন করা যাচ্ছে, যা সময় বাঁচায় এবং সার্ভিসের মান উন্নত করে। এই আর্টিকেলে , ২০২৫ সালের জন্য ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং খরচ সম্পর্কে বিস্তারিত  জানবেন। চলুন শুরু করা যাক!


ই-পাসপোর্ট কী এবং কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ?:

ই-পাসপোর্ট হলো এমন একটি পাসপোর্ট যাতে ইলেকট্রনিক চিপ সংযুক্ত থাকে। এটি ব্যক্তির বায়োমেট্রিক তথ্য সংরক্ষণ করে, যেমন ফিঙ্গারপ্রিন্ট, ছবি এবং ডিজিটাল স্বাক্ষর। ই-পাসপোর্টের সুবিধাগুলি হলো:

  • নিরাপত্তা বাড়ানো: ভুয়া পাসপোর্টের ঝুঁকি কমানো।
  • সীমান্তে দ্রুত প্রসেসিং: আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সময় সাশ্রয়।
  • ডিজিটাল রেকর্ড সংরক্ষণ: তথ্য হারানোর ঝুঁকি কম।

ই-পাসপোর্ট করার সুবিধা:

ই-পাসপোর্টের অনেক সুবিধা রয়েছে তবে সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে, এর মাধ্যমে ই-গেট ব্যবহার করে খুব দ্রুত ও সহজে ভ্রমণকারীরা যাতায়াত করতে পারবেন। ফলে বিভিন্ন বিমানবন্দরে ভিসা চেকিংয়ের জন্য লাইনে দাঁড়াতে থেকে মুক্তি পাওয়া যায় । এর মাধ্যমেই ইমিগ্রেশন দ্রুত হয়ে যাবে। ই-গেটের নির্দিষ্ট স্থানে পাসপোর্ট রেখে দাঁড়ালে ক্যামেরা ছবি তুলে নেবে। এমনকি  আঙুলের ছাপ যাচাইয়ের ব্যবস্থাও। সব ঠিক থাকলে কোনো ঝামেলা ছাড়াই আপনি  ইমিগ্রেশন পেরিয়ে যেতে পারবেন। কোনো গরমিল থাকলে জ্বলে উঠবে লালবাতি। কারও বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থাকলে, সেটিও সঙ্গে সঙ্গে জানা যাবে । 

পাসপোর্টের ধরণ নির্বাচন করুন:

২০২৫ সালে, বাংলাদেশে মূলত দুটি ধরণের পাসপোর্ট পাওয়া যায়: মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (MRP) এবং ই-পাসপোর্ট।

  • মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (MRP): এটি পুরোনো ধরণের পাসপোর্ট যা এখনও অনেকেই ব্যবহার করে থাকেন।
  • ই-পাসপোর্ট: আধুনিক পাসপোর্ট যা বায়োমেট্রিক ডেটা অন্তর্ভুক্ত করে এবং ভ্রমণের সময় নিরাপত্তা বাড়ায়।

আপনার ভ্রমণ প্রয়োজন অনুযায়ী পাসপোর্টের ধরণ নির্বাচন করা উচিত। তবে ই-পাসপোর্ট নেওয়া বর্তমানে সবচেয়ে ভালো বিকল্প, কারণ এটি দ্রুত এবং নিরাপদ। 

you may also like...

ই-পাসপোর্টের জন্য যা করতে হবে:

       অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন ফরম পূরণ ও পাসপোর্ট ফি পরিশোধ করে ছবি তোলা ও আঙুলের ছাপ দেওয়ার জন্য তারিখ নেবেন। তারপর নির্ধারিত তারিখে অনলাইন আবেদন ফরমের কপি, পাসপোর্ট ফি পরিশোধের রিসিট, যে বাসায় থাকেন সে বাসার বিদ্যুৎ বিলের কপি, জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি ও পুরান পাসপোর্টের কপিসহ পাসপোর্ট অফিসে যাবেন। সঙ্গে অবশ্যই মূল কাগজপত্রগুলোও সঙ্গে নেবেন। 


       এরপর ছবি ও আঙুলের ছাপের জন্য পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে লাইনে দাঁড়াবেন। ছবি তোলা, সব আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিশের ছবি গ্রহণ শেষে আপনাকে পাসপোর্ট সংগ্রহের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যসহ একটি রিসিট দেবে। পাসপোর্ট গ্রহণের সময় ডেলিভারির রসিদ প্রদর্শন বাধ্যতামূলক। আপনার পাসপোর্ট হয়ে গেলে আপনাকে মেসেজ করে জানাবে। এরপর আপনি পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে আপনার পাসপোর্ট নিয়ে আসবেন।

 পাসপোর্ট  আবেদন করার সহজ পদ্ধতি: জেনে নিন ধাপে ধাপে


ই-পাসপোর্ট করার জন্য আপনাকে নির্ধারিত কিছু ধাপ অনুসরণ করতে হবে।

১. অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া

  1.  পাসপোর্ট অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যান: www.epassport.gov.bd
  2. প্রোফাইল তৈরি করুন: নাম, ইমেইল, এবং মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে একটি অ্যাকাউন্ট খুলুন।
  3.  আবেদন ফর্ম পূরণ করুন:
  •     ব্যক্তিগত তথ্য (নাম, জন্মতারিখ, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর)।
  •     বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানা।
  •      বায়োমেট্রিক অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুকিং: নির্ধারিত সময়ে বায়োমেট্রিক তথ্য জমা দিন।

২. ডকুমেন্ট জমা দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা:

ই-পাসপোর্টের জন্য নিম্নোক্ত কাগজপত্র জমা দিতে হবে:
  • জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম সনদ।
  • পুরোনো পাসপোর্ট (যদি থাকে)।
  • পাসপোর্ট সাইজের ছবি (অনলাইনে আপলোডের জন্য)।
  • পিতামাতা বা আইনগত অভিভাবকের জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি (১৮ বছরের কম বয়সীদের জন্য)।
৩. বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান:

সার্ভিস সেন্টারে গিয়ে ফিঙ্গারপ্রিন্ট, ডিজিটাল ছবি এবং স্বাক্ষর প্রদান করতে হবে। এটি ই-পাসপোর্ট তৈরির একটি বাধ্যতামূলক ধাপ।

৪. ফি প্রদান :

ই-পাসপোর্টের জন্য নির্ধারিত ফি জমা দিতে হবে। পেমেন্ট মোবাইল ব্যাংকিং বা ব্যাংকের মাধ্যমে করা যায়।
  • ই-পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে?
  • ই-পাসপোর্টের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং তথ্য নিচে দেওয়া হলো:
  • জাতীয় পরিচয়পত্র (NID)
  • পুরোনো পাসপোর্ট (যদি থাকে)
  • বায়োমেট্রিক তথ্য: ফিঙ্গারপ্রিন্ট, ছবি, এবং স্বাক্ষর।
  • ফি প্রদান স্লিপ: পেমেন্ট করার প্রমাণ।

আবেদন জমা ও সাক্ষাৎকারের তারিখ নির্ধারণ

অনলাইনে আবেদন জমা দেওয়ার পর, আপনাকে একটি সাক্ষাৎকারের তারিখ নির্ধারণ করতে হবে। এই তারিখে আপনাকে পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে বায়োমেট্রিক ডেটা প্রদান করতে হবে। এখানে আপনার ছবি, আঙুলের ছাপ, এবং স্বাক্ষর নেওয়া হবে।

ই-পাসপোর্ট করতে কত টাকা খরচ হয়? (২০২৫ আপডেট)

পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে
বাংলাদেশি আবেদনকারীদের জন্য ৪৮ পৃষ্ঠার পাঁচ বছর মেয়াদি পাসপোর্টের ক্ষেত্রে সাধারণ (২১ কর্মদিবস) ফি ৪ হাজার ২৫ টাকা, জরুরি (১০ কর্মদিবস) ফি ৬ হাজার ৩২৫ টাকা ও অতীব জরুরি (২ কর্মদিবস) ফি ৮ হাজার ৬২৫ টাকা এবং ১০ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ৫ হাজার ৭৫০ টাকা, জরুরি ফি ৮ হাজার ৫০ টাকা ও অতীব জরুরি ফি ১০ হাজার ৩৫০ টাকা।

৬৪ পৃষ্ঠার পাঁচ বছর মেয়াদি পাসপোর্টের জন্য সাধারণ ফি ৬ হাজার ৩২৫ টাকা, জরুরি ফি ৮ হাজার ৬২৫ টাকা ও অতীব জরুরি ফি ১২ হাজার ৭৫ টাকা এবং ১০ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ৮ হাজার ৫০ টাকা, জরুরি ফি ১০ হাজার ৩৫০ টাকা ও অতীব জরুরি ফি ১৩ হাজার ৮০০ টাকা। সব ফির সঙ্গে যুক্ত হবে ১৫ শতাংশ ভ্যাট। ১৮ বছরের কম এবং ৬৫ বছরের বেশি বয়সী আবেদনকারীরা কেবলমাত্র ৫ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট পাবেন। অতি জরুরি আবেদনের ক্ষেত্রে পুলিশ প্রতিবেদন সঙ্গে আনতে হবে।


ই-পাসপোর্ট ফি আবেদনকারীর চাহিদা এবং পাসপোর্টের মেয়াদের উপর নির্ভর করে। নিচে ২০২৫ সালের জন্য খরচের তালিকা দেওয়া হলো:

৫ বছরের মেয়াদী ই-পাসপোর্ট:

  • সাধারণ প্রসেসিং: ৩,৪৫০ টাকা।
  • জরুরি প্রসেসিং: ৫,৭৫০ টাকা।
  • অতি জরুরি প্রসেসিং: ৭,৮৫০ টাকা।

১০ বছরের মেয়াদী ই-পাসপোর্ট:

  • সাধারণ প্রসেসিং: ৫,৭৫০ টাকা।
  • জরুরি প্রসেসিং: ৮,৫০০ টাকা।
  • অতি জরুরি প্রসেসিং: ১১,৫০০ টাকা।

You may also like...

ই-পাসপোর্ট ডাউনলোড করার নিয়ম


ই-পাসপোর্ট ডাউনলোডের জন্য আবেদনপত্র জমা দেওয়ার পর আপনাকে কিছু ধাপ অনুসরণ করতে হবে:

স্ট্যাটাস চেক করুন:

ওয়েবসাইটে লগইন করে "Application Status" সেকশনে যান।

ডেলিভারি মেসেজ প্রাপ্তি:

পাসপোর্ট প্রস্তুত হলে মোবাইলে একটি মেসেজ পাবেন।

পিকআপ বা ডেলিভারি:

নির্ধারিত পাসপোর্ট অফিস থেকে পিকআপ করুন অথবা ডাকযোগে গ্রহণ করুন।

পাসপোর্টের ডেলিভারি প্রক্রিয়া:

পাসপোর্টের ডেলিভারি সাধারণত তিনটি উপায়ে হয়:

  • নিয়মিত ডেলিভারি (১৫-২১ দিন):   এটি সবচেয়ে সাধারণ ডেলিভারি পদ্ধতি।
  • এক্সপ্রেস ডেলিভারি (৭ দিন):          দ্রুত পাসপোর্ট পেতে চাইলে এক্সপ্রেস ডেলিভারি নিতে পারেন।
  • সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারি (৩ দিন): অতিশীঘ্র পাসপোর্ট প্রয়োজন হলে সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারি উপযুক্ত।

You may also like...

উপসংহার:

ই-পাসপোর্ট প্রক্রিয়া সহজ, নিরাপদ এবং আধুনিক। উপরের নির্দেশিকা অনুসরণ করলে আপনি খুব সহজে আপনার ই-পাসপোর্ট তৈরি করতে পারবেন। সঠিক তথ্য ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিলে প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হবে। ই-পাসপোর্ট প্রাপ্তির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ভ্রমণের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।

Frequently Asked Questions প্রায় জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQs):

১. ই-পাসপোর্ট কতদিনে প্রস্তুত হয়?
সাধারণত সাধারণ প্রসেসিংয়ে ১৫-২০ কর্মদিবস, জরুরি প্রসেসিংয়ে ৭-১০ কর্মদিবস এবং অতি জরুরি প্রসেসিংয়ে ২-৩ কর্মদিবস সময় লাগে।
২. ই-পাসপোর্ট করার জন্য বয়সসীমা কত?
ই-পাসপোর্ট করতে বয়সসীমার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তবে ১৮ বছরের কম বয়সীদের জন্য পিতামাতা বা অভিভাবকের অনুমতি প্রয়োজন।
৩. কি কি মাধ্যমে ফি প্রদান করা যায়?
ব্যাংক, মোবাইল ব্যাংকিং (বিকাশ, রকেট), এবং ডেবিট/ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ফি প্রদান করা যায়।
৪. পুরোনো পাসপোর্ট থাকলে কি জমা দিতে হবে?
হ্যাঁ, পুরোনো পাসপোর্ট জমা দেওয়া আবশ্যক। এটি নতুন পাসপোর্ট প্রক্রিয়ার অংশ।

৫.পাসপোর্ট আবেদনের জন্য কোন কোন ডকুমেন্ট দরকার?
জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্ম সনদ, পুরানো পাসপোর্ট (যদি থাকে), এবং ফি জমার রসিদ দরকার হবে।

৬.পাসপোর্ট আবেদনের ফি কত?
ফি নির্ভর করে আপনি কোন ডেলিভারি পদ্ধতি বেছে নিচ্ছেন তার উপর। সাধারণত, নিয়মিত, এক্সপ্রেস, এবং সুপার এক্সপ্রেসের জন্য ভিন্ন ভিন্ন ফি রয়েছে।

৭.পাসপোর্ট হাতে পেতে কতদিন লাগে?
নিয়মিত ডেলিভারিতে ১৫-২১ দিন, এক্সপ্রেসে ৭ দিন, এবং সুপার এক্সপ্রেসে ৩ দিনের মধ্যে পাসপোর্ট পাওয়া যায়।

৮.পাসপোর্ট আবেদনের পর কিভাবে স্ট্যাটাস চেক করা যায়?
আপনার অনলাইন রেজিস্ট্রেশন আইডি (OID) অথবা অ্যাপ্লিকেশন আইডি এবং জন্মতারিখ দিয়ে অনলাইনে স্ট্যাটাস চেক করতে পারবেন।


tags:
পাসপোর্ট, ই-পাসপোর্ট আবেদন, ২০২৪ পাসপোর্ট, পাসপোর্টের নিয়ম, পাসপোর্ট ফি, পাসপোর্ট ডেলিভারি, পাসপোর্ট চেক, পাসপোর্ট আবেদন প্রক্রিয়া, পাসপোর্টের জন্য কাগজপত্র, বাংলাদেশ পাসপোর্ট,
2025 সালে পাসপোর্ট আবেদন, ই-পাসপোর্ট আবেদন বাংলাদেশ, পাসপোর্ট ডেলিভারি সময়, অনলাইনে পাসপোর্ট চেক, পাসপোর্ট ফি কত 2025

Next Post Previous Post