কম বয়সীদের স্ট্রোক কেন বাড়ছে? কারণ, ঝুঁকি এবং প্রতিরোধ জানুন চিকিৎসকের পরামর্শে I Health tips

 কম বয়সীদের স্ট্রোক কেন বাড়ছে? কারণ, ঝুঁকি এবং প্রতিরোধ জানুন চিকিৎসকের পরামর্শে


কম বয়সীদের স্ট্রোক কেন বাড়ছে? কারণ, ঝুঁকি এবং প্রতিরোধ জানুন চিকিৎসকের পরামর্শে

কম বয়সীদের স্ট্রোক কেন বাড়ছে? কারণ, ঝুঁকি এবং প্রতিরোধ জানুন চিকিৎসকের পরামর্শে




স্ট্রোককে আমরা সাধারণত বয়স্ক মানুষের রোগ হিসেবে জানি। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণা ও চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণ বলছে—স্ট্রোক এখন কম বয়সী তরুণ-তরুণীদের মধ্যেও দ্রুত বাড়ছে। ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের মধ্যেও স্ট্রোকের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, এমনকি শিশুদের মধ্যেও দেখা যায় বিরল হলেও স্ট্রোকের ঘটনা।

বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজের নিউরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সৈয়দা শাবনাম মালিক কম বয়সীদের স্ট্রোকের কারণ ও করণীয় নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরেছেন।



---


⭐ কম বয়সীদের স্ট্রোক কেন হয়?


ডা. শাবনাম মালিকের মতে, আধুনিক জীবনযাত্রা, খাদ্যাভ্যাস, অলসতা ও বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার কারণে তরুণদের স্ট্রোকের ঝুঁকি আগের তুলনায় অনেক বেড়ে গেছে।


🔹 ১. অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও অভ্যাস


সারাদিন বসে থাকা


খেলাধুলার অভাব


অতিরিক্ত জাঙ্ক ফুড খাওয়া


কম বয়সে ধূমপান, অ্যালকোহল ও মাদক


স্থূলতা বা হঠাৎ ওজন বৃদ্ধি



🔹 ২. উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস


আগে শুধু বয়স্কদের মধ্যে দেখা যেত, এখন কম বয়সীদের মধ্যেও উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস দেখা যায়, যা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।


🔹 ৩. হার্টের জন্মগত সমস্যা


যেমন—


হার্টের ভাল্বের সমস্যা


মাইট্রাল স্টেনোসিস



এগুলোর কারণে রক্ত জমাট বেঁধে মস্তিষ্কে স্ট্রোক হতে পারে।


🔹 ৪. বংশগতভাবে কোলেস্টেরল বেশি হওয়া


যাদের পরিবারে উচ্চ কোলেস্টেরলের ইতিহাস আছে, তাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি তুলনামূলক বেশি।


🔹 ৫. রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতা


কিছু মানুষের রক্তে জমাট বাঁধার ক্ষমতা বেশি থাকে, যাকে বলা হয় Hypercoagulable State।

এ অবস্থায় খুব সহজেই ব্লাড ক্লট তৈরি হয়ে স্ট্রোক হতে পারে।


🔹 ৬. অটোইমিউন রোগ – SLE (Systemic Lupus Erythematosus)


এসএলই রোগীদের ক্ষেত্রে রক্ত জমাট বাঁধা এবং প্রদাহ বাড়ায়, যা স্ট্রোকের কারণ হতে পারে।


🔹 ৭. মস্তিষ্কের রক্তনালির গঠনগত সমস্যা


AVM (Arteriovenous Malformation)


Aneurysm



এ দুই সমস্যায় রক্তনালি ছিঁড়ে গিয়ে হেমোরেজিক স্ট্রোক হতে পারে।


🔹 ৮. মাদকদ্রব্য সেবন


এমফিটামিন, কোকেইনসহ অন্যান্য নেশাজাতীয় দ্রব্য তরুণদের মধ্যে স্ট্রোকের প্রধান কারণ।


🔹 ৯. বংশগত ঝুঁকি ও অলস জীবনযাপন


যাদের পরিবারে স্ট্রোকের ইতিহাস আছে, ওজন বেশি, এবং ব্যায়াম করেন না—তাদের ঝুঁকি বেশি।


🔹 ১০. শিশুদের বিরল স্ট্রোক – ময়াময়া রোগ


৫–১০ বছর বয়সী শিশুদের মস্তিষ্কের রক্তনালির একটি বিরল সমস্যা ময়াময়া রোগ, যা স্ট্রোকের কারণ হতে পারে।



---


⭐ কম বয়সে স্ট্রোক প্রতিরোধ করবেন যেভাবে


স্ট্রোক প্রতিরোধ সম্পূর্ণ সম্ভব—যদি জীবনযাপনে কিছু পরিবর্তন আনা যায় এবং নিজের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন থাকা যায়।


🔹 জীবনযাত্রার পরিবর্তন


প্রতিদিন ২০–৩০ মিনিট হাঁটা


জাঙ্ক ফুড কমানো


ধূমপান ও অ্যালকোহল সম্পূর্ণ বন্ধ


মাদকদ্রব্য থেকে দূরে থাকা


ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা



🔹 খাদ্যাভ্যাস


ভাতের সাথে অতিরিক্ত লবণ না খাওয়া


ফলমূল ও সবজি বেশি খাওয়া


চর্বি কম খাবার গ্রহণ



🔹 শারীরিক সমস্যার নিয়ন্ত্রণ


উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা


ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ


কোলেস্টেরল কমানোর চেষ্টা


জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি অনেক ক্ষেত্রে বন্ধ করতে হয় (চিকিৎসকের পরামর্শে)



🔹 যারা একবার স্ট্রোক বা TIA হয়েছে


তাদের দ্বিতীয় স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেক বেশি।

সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ইকোস্প্রিন জাতীয় ওষুধ দীর্ঘ সময় চালিয়ে যেতে হয়।


Next Post Previous Post