দাঁতে গর্ত হয় কেন? গর্ত হলে কি করণীয় জেনে নিন

দাঁতে গর্ত হয় কেন? গর্ত হলে কি করণীয় জেনে নিন


দাঁতে গর্ত হয় কেন? গর্ত হলে কি করণীয় জেনে নিন

দাঁতে গর্ত হয় কেন? গর্ত হলে কি করণীয় জেনে নিন



দাঁতে গর্ত বা ডেন্টাল ক্যাভিটি একটি সাধারণ সমস্যা যা বিভিন্ন বয়সের মানুষদের মধ্যেই দেখা যায়। দাঁতের সঠিক যত্নের অভাবে, অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার খাওয়া, অথবা দাঁতের ফাঁকে খাদ্যকণা আটকে থাকার ফলে ক্যাভিটি হতে পারে। দাঁতে গর্ত হলে সময়মতো সমাধান না করলে এটি দাঁতের ক্ষয়, ব্যথা, এমনকি দাঁত ফেলে দেওয়ার কারণ হতে পারে। এই সমস্যা এড়াতে সঠিক যত্ন ও চিকিৎসা গ্রহণ জরুরি।

 অতি মূল্যবান সম্পদ দাঁত(Teeth)। বর্তমানে দাঁত ক্ষয় ও দাঁতে ছিদ্র হওয়া একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাধারণত শিশু, টিনএজার ও বয়স্কদের এই সমস্যাটি বেশি হতে দেখা যায়। ব্যাকটেরিয়ার(Bacteria) সংক্রমণের ফলেই দাঁত ক্ষয় হয়ে থাকে।

ঘন ঘন স্ন্যাক্স ও ড্রিঙ্কস(Drinks) খাওয়া, অনেকক্ষণ যাবত দাঁতের মধ্যে খাবার লেগে থাকা, ফ্লোরাইড এর অপর্যাপ্ততা, মুখ ড্রাই থাকা, মুখের স্বাস্থ্যবিধি না মানা, পুষ্টির ঘাটতি এবং ক্ষুধামন্দার সমস্যা থাকা ইত্যাদি কারণে দাঁতে গর্ত ও দাঁত(Teeth) ক্ষয় রোগ হয়ে থাকে।


দাঁতের মধ্যে নানা কারণে গর্ত হতে পারে। যেমন দন্তক্ষয় বা ডেন্টাল ক্যারিজ, দাঁত(Teeth) ভেঙে গিয়ে কিংবা রুট ক্যানেল চিকিত্সার জন্যও গর্ত হয়ে যায় দাঁত। দাঁতের মধ্যে গর্ত বা ক্যাভিটি হলে তাতে ময়লা, খাদ্যকণা ইত্যাদি জমে সংক্রমণ(Infection) হয়। দাঁতে ব্যথা করে ও শিরশির অনুভূতি শুরু হয়। শিশুদের এই গর্ত বা ক্যাভিটি হলে তারা ব্যথায় কষ্ট পায় ও কিছু খেতে গেলেই দাঁত শিরশির করে ওঠে।
ডেন্টাল ক্যারিজ প্রাথমিক অবস্থায় খুবই ছোট কালো গর্তের মতো দেখায়। এই কালো গর্ত দাঁতে তৈরি হলেও ব্যথা(Pain) অনুভূত হয় না। তাই শিশুরাতো বটেই, প্রাপ্তবয়স্করাও পারে না যে গর্ত তৈরি হচ্ছে। এই গর্তের মধ্যে জটিলতা তৈরি হওয়ার পরই কেবল ধরা পড়ে। 

এছাড়া দাঁত(Teeth) ভেঙে গিয়ে কিংবা রুট ক্যানেল চিকিত্সার জন্যও গর্ত হয়ে যায় দাঁত। দাঁতের মধ্যে গর্ত বা ক্যাভিটি হলে তাতে ময়লা, খাদ্য ভেঙে গেলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রোগী সেটা বুঝতে পারে।
রুট ক্যানেল চিকিতসায় রোগী যদি পরসেলিন ক্রাউন বা মুকুট পরে না নেয়, তাহলেও দাঁতে গর্ত বেড়ে যায়। পরে রুট ক্যানেল এবং ভেতরের জিনিসপত্র সব বেরিয়ে আসে।

You may also like...

দাঁতে গর্ত হলে কী চিকিত্সা করবেন

 দাঁতের গর্তের লক্ষণ দেখা দেওয়া মাত্র দেরি না করে শূন্য জায়গাটা ভর্তি করে নেওয়া উচিত। কারণ, ডেন্টাল ক্যারিজ(Dental carriage) যদি ধীরে ধীরে ডেন্টিন থেকে আরও গভীরে অর্থাত্ পাল্প চেম্বার পর্যন্ত চলে যায়, তবে ব্যথার তীব্রতা বেড়ে যায়। চিকিত্সা ব্যবস্থাও জটিল হয়ে পড়ে।


ভাঙা দাঁতকে আজকাল ফিলিং ম্যাটেরিয়াল বা লাইট কিউর দিয়ে সুন্দরভাবে পূরণ করা যায়, যা দেখতে অবিকল স্বাভাবিক রঙের হয়। রুট ক্যানেল চিকিত্সা করা দাঁতের ক্রাউন বা মুকুট বসাতে দেরি করা উচিত নয়।

দাঁতে গর্ত হওয়ার কারণ

১. খাদ্যকণা আটকে থাকা: দাঁতের ফাঁকে জমে থাকা খাবার ব্যাকটেরিয়ার প্রজননক্ষেত্র তৈরি করে, যা অ্যাসিড তৈরি করে এবং দাঁতের এনামেল ক্ষয় করে।

২. অতিরিক্ত মিষ্টি গ্রহণ: চিনি-জাতীয় খাবার ব্যাকটেরিয়ার জন্য আদর্শ খাদ্য। এই ব্যাকটেরিয়া অ্যাসিড তৈরি করে যা দাঁতে গর্ত সৃষ্টি করে।

৩. দাঁতের সঠিক যত্নের অভাব: নিয়মিত দাঁত ব্রাশ না করা এবং ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার না করলে ক্যাভিটির ঝুঁকি বাড়ে।

৪. ফ্লুরাইডের অভাব: ফ্লুরাইড দাঁতের এনামেলকে মজবুত করে। এর অভাবে দাঁত ক্যাভিটির শিকার হতে পারে।

দাঁতে গর্তের লক্ষণ

১. ঠান্ডা বা গরম খাবার খাওয়ার সময় দাঁতে ব্যথা অনুভব।

২. দাঁতের কোনো অংশে কালো বা বাদামি দাগ দেখা।

৩. মুখে দুর্গন্ধ।

৪. খাবার চিবানোর সময় দাঁতে ব্যথা।

জেনে নিন ক্যাভিটি প্রতিরোধের ৫ উপায়-

 সঠিক নিয়মে প্রতিদিন দুই বেলা দাঁত ব্রাশ করা উচিত, চিনিযুক্ত পানীয় বা আঠালো খাবার, অম্লযুক্ত খাবার, কফি ইত্যাদি এড়িয়ে চলা উচিত।

 খাওয়ার পর কুলি করে মুখ ধুয়ে ফেলা দরকার।

 শুধু ব্রাশ নয়, সুতো বা ফ্লস দিয়ে দাঁতের ফাঁক পরিষ্কার করা উচিত।

 ধূমপান বর্জন করা দরকার।

 আর অবশ্যই ক্যাভিটি প্রতিরোধের জন্য নিয়মিত দাঁত পরীক্ষা করা আবশ্যক।

১. দাঁতের যত্ন: প্রতিদিন দুইবার ভালো মানের টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করুন। দাঁতের ফাঁক পরিষ্কার করতে ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার করুন।

২. ডেন্টিস্টের পরামর্শ: যদি দাঁতে গর্ত হয় তবে দেরি না করে ডেন্টিস্টের কাছে যান। তারা আপনার গর্তের গভীরতা অনুযায়ী ফিলিং বা রুট ক্যানাল থেরাপি প্রস্তাব করতে পারেন।

৩. ফ্লুরাইড থেরাপি: ডেন্টিস্টের কাছ থেকে ফ্লুরাইড থেরাপি করিয়ে নিতে পারেন। এটি দাঁতের এনামেল পুনর্গঠনে সাহায্য করে।

4. খাবারের প্রতি সতর্কতা: মিষ্টি এবং সফট ড্রিঙ্কস এড়িয়ে চলুন। প্রচুর পানি পান করুন এবং খাবারের পরে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

You may also like...

 

দাঁতের গর্ত প্রতিরোধের উপায়

১. সঠিক খাদ্যাভ্যাস: চিনি ও কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার কম খাওয়ার চেষ্টা করুন।

২. নিয়মিত দাঁত পরীক্ষা: ছয় মাস পরপর ডেন্টিস্টের কাছে দাঁতের নিয়মিত চেকআপ করান।

৩. মাউথওয়াশ ব্যবহার: অ্যান্টিসেপ্টিক মাউথওয়াশ ব্যবহার করলে মুখের ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা কমানো যায়।

৪. ফ্লুরাইডযুক্ত পণ্য ব্যবহার: দাঁত মজবুত রাখতে ফ্লুরাইডযুক্ত টুথপেস্ট ব্যবহার করুন।

উপসংহার

দাঁতে গর্ত হওয়া একটি সহজে প্রতিরোধযোগ্য সমস্যা। সঠিক যত্ন ও নিয়মিত ডেন্টাল চেকআপের মাধ্যমে আপনি এই সমস্যা থেকে মুক্ত থাকতে পারেন। সময়মতো সমাধান না নিলে এটি জটিল আকার ধারণ করতে পারে, তাই দেরি না করে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিন। দাঁত সুন্দর থাকলে আপনার হাসি আরও উজ্জ্বল হবে। সুস্থ থাকুন, নিজেকে এবং পরিবারকে ভালোবাসুন। আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে জানান। আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন। পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

Next Post Previous Post