অনলাইনে বিমানের টিকেট বুকিং - অনলাইনে বিমানের টিকেট কাটার নিয়ম(Online Flight Ticket Booking)

অনলাইনে বিমানের টিকেট বুকিং - অনলাইনে বিমানের টিকেট কাটার নিয়ম(Online Flight Ticket Booking)

অনলাইনে বিমানের টিকেট কাটার নিয়ম
অনলাইনে বিমানের টিকেট কাটার নিয়ম



প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে আমাদের জীবন অনেক সহজ হয়েছে, বিশেষ করে অনলাইনে বিভিন্ন সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে। এখন যেকোনো সময়ে ঘরে বসে অনলাইনে বিমানের টিকেট বুকিং করা সম্ভব। আগে যেখানে বিমান টিকিট কাটার জন্য এজেন্সিতে বা এয়ারপোর্টের টিকিট কাউন্টারে যাওয়া লাগতো, সেখানে এখন সহজে অনলাইনে এই কাজটি করা যায়। আজকের এই পোস্টে আমরা অনলাইনে বিমানের টিকেট কাটার নিয়ম, কম দামে টিকেট বুকিং করার উপায়, বিমানের বর্তমান দাম এবং টিকেট চেক ও বাতিল করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

অনলাইনে বিমানের টিকেট বুকিং

অনলাইনে বিমানের টিকেট বুকিং করা অনেক সহজ একটি প্রক্রিয়া। আপনি যে এয়ারলাইন্সে ভ্রমণ করতে চান, তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে সহজেই টিকেট বুক করতে পারেন। সাধারণত, বুকিংয়ের প্রক্রিয়াটি সহজ এবং গ্রাহকবান্ধব। টিকেট বুকিং করতে প্রথমে ব্রাউজারে এয়ারলাইন্সের নাম লিখে সার্চ করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশ থেকে বিমানের টিকিট কাটতে চাইলে "Biman Bangladesh Airlines" লিখে সার্চ করে অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। একই নিয়মে বিশ্বের যে কোনো দেশের এয়ারলাইন্সের টিকিট বুক করা যাবে।

অনলাইনে বিমানের টিকেট কাটার ধাপসমূহ

অনলাইনে বিমানের টিকিট কাটার জন্য আপনাকে কয়েকটি সহজ ধাপ অনুসরণ করতে হবে:

  1. ওয়েবসাইটে প্রবেশ করা: যেকোনো ব্রাউজারে এয়ারলাইন্সের নাম লিখে সার্চ করুন। যেমন, Biman Bangladesh Airlines লিখে সার্চ করলে প্রথম সার্চ রেজাল্টে অফিসিয়াল ওয়েবসাইটটি পাবেন।

  2. টিকেট বুকিং অপশন নির্বাচন: ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পর মেনু থেকে “Book Flight” অপশনটিতে ক্লিক করতে হবে। এখানে সাধারণত তিনটি অপশন থাকে:

    • One Way (একদিকে যাত্রা)
    • Round Trip (যাওয়া এবং আসা একসঙ্গে)
    • Multi-City (একাধিক গন্তব্য)
  3. ভ্রমণ সংক্রান্ত তথ্য প্রদান: আপনি কোথা থেকে কোথায় ভ্রমণ করতে চান, তার তথ্য দিতে হবে। যেমন, “Flying from” অপশনে আপনি যাত্রা শুরুর স্থান এবং “Flying to” অপশনে গন্তব্যস্থান বেছে নেবেন। এরপর যাত্রার তারিখ নির্বাচন করতে হবে।

  4. ভাড়া নির্বাচন এবং মূল্য প্রদান: পরবর্তী ধাপে বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট এবং ভাড়ার তালিকা দেখতে পাবেন। আপনার পছন্দের ফ্লাইট বেছে নিয়ে পেমেন্ট মেথড নির্বাচন করে মূল্য পরিশোধ করতে হবে। পেমেন্টের জন্য আপনি ক্রেডিট/ডেবিট কার্ড, বিকাশ, রকেট ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারেন।

বিমানের টিকেট কোথায় পাওয়া যায়?

অনলাইনে বিমানের টিকেট কাটার জন্য বেশ কিছু জনপ্রিয় ওয়েবসাইট রয়েছে। যেমন, Booking.com, Expedia.com, MakeMyTrip.com ইত্যাদি সাইটগুলোতে সহজে টিকেট পাওয়া যায়। বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের টিকিট কাটতে হলে আপনি সরাসরি তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকেও বুক করতে পারেন।

কম দামে বিমানের টিকেট কাটার উপায়

অনলাইনে টিকেট বুক করার সময় কিছু বিশেষ অফার বা ডিসকাউন্ট পেতে পারেন। এজন্য বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ফ্লাইট বুক করার সময় বিশেষ ডিসকাউন্ট কোড ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া, বিভিন্ন ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট করলে বিশেষ ছাড় পাওয়া যায়। অনেক সময়, একাধিক দেশে যাতায়াতের জন্য Multi-City অপশন নির্বাচন করলে তুলনামূলকভাবে কম দামে টিকেট পাওয়া যায়।

বিমানের টিকেটের দাম কত?

বিমানের টিকেটের দাম স্থান ও সময় অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। উদাহরণ হিসেবে, ঢাকা থেকে নেপাল বিমান টিকিটের মূল্য প্রায় ৳18,000, আর ঢাকা থেকে সিঙ্গাপুর বিমান টিকিটের মূল্য ৳41,499। আপনি যে সময়ে ফ্লাইট নিতে চান, সেই সময়ের ফ্লাইটের প্রাপ্যতা এবং চাহিদার উপর ভিত্তি করে টিকিটের দাম ওঠানামা করতে পারে।

অনলাইনে বিমানের টিকেট চেক করার নিয়ম

আপনার টিকেট কাটা হয়ে গেলে আপনি চাইলে তা অনলাইনে চেক করতে পারেন। এজন্য এয়ারলাইন্সের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে “Manage Booking” অপশনে গিয়ে টিকেটে উল্লেখিত “Booking Reference” এবং আপনার লাস্ট নাম দিয়ে সার্চ করলেই টিকেটের বিস্তারিত তথ্য দেখতে পাবেন। এ পদ্ধতিতে আপনার টিকেটের সময়, তারিখ এবং অন্যান্য তথ্য যাচাই করা সম্ভব।

বিমানের টিকেটের তারিখ পরিবর্তন

অনেক সময় যাত্রার তারিখ পরিবর্তনের প্রয়োজন হতে পারে। কিছু টিকেট নন-রিফান্ডেবল এবং নন-চ্যাঞ্জেবল হয়ে থাকে, যার ফলে তারিখ পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। তবে চ্যাঞ্জেবল টিকেট হলে নির্দিষ্ট ফি দিয়ে তারিখ পরিবর্তন করা যায়। আপনি এয়ারলাইন্সের অফিসে গিয়ে বা টিকেট বুকিং এজেন্সির মাধ্যমে তারিখ পরিবর্তন করতে পারেন।

বিমানের টিকেট বাতিল করার নিয়ম

যদি কোনো কারণে আপনার যাত্রা বাতিল করতে হয়, তবে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে টিকেট বাতিল করতে হবে। সাধারণত, ফ্লাইটের নির্দিষ্ট সময়ের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাতিলের জন্য ৫-১০% চার্জ প্রযোজ্য হয়। ফ্লাইট মিস করলে অতিরিক্ত ৫০ ডলার ফ্লাইট মিস চার্জ দিতে হয়। টিকেট বাতিল করলে মূল্য ফেরত পেতে ১৫ দিন থেকে এক মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

অ্যাপের মাধ্যমে বিমানের টিকেট কাটার নিয়ম

অনলাইনের পাশাপাশি, মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে বিমানের টিকিট কাটার সুবিধাও রয়েছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নিজস্ব অ্যাপ রয়েছে, যার মাধ্যমে আপনি সরাসরি টিকিট বুক করতে পারেন। অ্যাপটি ব্যবহার করতে হলে প্রথমে আপনাকে গুগল প্লে স্টোর বা অ্যাপল অ্যাপ স্টোর থেকে অ্যাপটি ডাউনলোড করতে হবে। এরপর অ্যাপে সাইন আপ করে আপনার পছন্দের ফ্লাইট বেছে নিয়ে টিকেট বুক করতে পারবেন।

শেষ কথা

অনলাইনে বিমানের টিকেট বুকিং করার প্রক্রিয়া সহজ এবং সময় সাশ্রয়ী। আপনাকে শুধু সঠিকভাবে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করে টিকিট বুক করতে হবে। আমরা আশা করি, এই আর্টিকেলটি আপনাকে অনলাইনে বিমানের টিকিট কাটার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করেছে। যদি আরও কোনো প্রশ্ন থাকে, তাহলে কমেন্টে জানাতে পারেন।


FAQs: অনলাইন ফ্লাইট টিকেট বুকিং

👉অনলাইনে ফ্লাইট টিকেট বুক করার প্রক্রিয়া কি?

অনলাইনে ফ্লাইট টিকিট বুক করার জন্য, আপনাকে এয়ারলাইনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বা কোনো অনুমোদিত বুকিং সাইটে যেতে হবে। আপনার প্রস্থান এবং গন্তব্য শহরগুলি নির্বাচন করুন, আপনার ভ্রমণের তারিখগুলি চয়ন করুন এবং অর্থপ্রদান এবং বুকিং সম্পূর্ণ করতে অন-স্ক্রীন নির্দেশাবলী অনুসরণ করুন৷

👉কোন ওয়েবসাইটগুলি অনলাইন ফ্লাইট টিকেট বুকিং পরিষেবা প্রদান করে?

অনলাইন ফ্লাইট টিকিট বুকিংয়ের জন্য জনপ্রিয় ওয়েবসাইটগুলির মধ্যে রয়েছে Booking.com, Expedia.com এবং MakeMyTrip.com। এছাড়াও আপনি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বা সৌদি এয়ারলাইন্সের মতো এয়ারলাইন ওয়েবসাইটগুলির মাধ্যমে সরাসরি বুক করতে পারেন।

👉বুকিং করার পরে আমি কীভাবে আমার ফ্লাইট টিকিটের বিবরণ পরীক্ষা করব?

বুকিং করার পরে, এয়ারলাইনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যান, "বুকিং পরিচালনা করুন" বিভাগে যান, আপনার শেষ নাম এবং বুকিং রেফারেন্স (PNR) লিখুন এবং আপনি আপনার ফ্লাইটের সমস্ত বিবরণ পাবেন।

👉বুকিং করার পর আমি কি আমার ফ্লাইটের তারিখ পরিবর্তন করতে পারি?

হ্যাঁ, তবে এটি নির্ভর করে এয়ারলাইন্সের নীতি এবং আপনি যে ধরনের টিকিট কিনেছেন তার উপর। কিছু টিকিট অ-পরিবর্তনযোগ্য, অন্যরা ফি দিয়ে পরিবর্তনের অনুমতি দিতে পারে। আরও সহায়তার জন্য এয়ারলাইন বা ট্রাভেল এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করুন।

👉আমি কিভাবে একটি মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ফ্লাইট টিকেট বুক করতে পারি?

গুগল প্লে স্টোর বা অ্যাপল অ্যাপ স্টোর থেকে এয়ারলাইন্সের মোবাইল অ্যাপ (যেমন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স) ডাউনলোড করুন, নিবন্ধন করুন এবং আপনার টিকিট বুক করার ধাপগুলি অনুসরণ করুন। অ্যাপটি ফ্লাইট অনুসন্ধান, অর্থপ্রদানের বিকল্প এবং বুকিং পরিচালনা সহ ওয়েবসাইটের মতো একই বৈশিষ্ট্যগুলি সরবরাহ করে।

👉একটি ফ্লাইট টিকেট বুক করার জন্য কি কি নথি প্রয়োজন?

আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জন্য, আপনার একটি বৈধ পাসপোর্ট এবং কিছু ক্ষেত্রে ভিসার প্রয়োজন হবে। অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের জন্য, আপনার একটি বৈধ পরিচয়পত্রের প্রয়োজন হতে পারে, যেমন একটি জাতীয় পরিচয়পত্র। প্রয়োজনীয় অর্থপ্রদানের পদ্ধতি (ক্রেডিট কার্ড, বিকাশ বা রকেটের মতো মোবাইল পেমেন্ট বিকল্প) প্রয়োজন।

👉আমি কিভাবে ফ্লাইট টিকিটের জন্য সেরা মূল্য পেতে পারি?

তাড়াতাড়ি বুকিং করা, ভ্রমণের তারিখের সাথে নমনীয় হওয়া এবং Expedia বা Skyscanner-এর মতো তুলনামূলক ওয়েবসাইট ব্যবহার করা আপনাকে সেরা ডিল খুঁজে পেতে সাহায্য করতে পারে। উপরন্তু, এয়ারলাইনগুলি প্রায়শই তাদের ওয়েবসাইট এবং মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনগুলিতে ছাড় দেয়, তাই প্রচারগুলিতে নজর রাখুন৷

👉আমি আমার ফ্লাইট বাতিল করতে চাইলে আমার কী করা উচিত?

বেশিরভাগ এয়ারলাইনগুলি আপনাকে আপনার ফ্লাইট বাতিল করার অনুমতি দেয়, তবে এয়ারলাইনের নীতি এবং আপনি কতটা আগে বাতিল করেছেন তার উপর নির্ভর করে একটি বাতিলকরণ ফি হতে পারে। আপনি সাধারণত এয়ারলাইনের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বা গ্রাহক পরিষেবার সাথে যোগাযোগ করে বাতিল করতে পারেন।

👉আমি কি মোবাইল ব্যাংকিং বা পেমেন্ট গেটওয়ে ব্যবহার করে আমার ফ্লাইটের টিকিটের জন্য অর্থ প্রদান করতে পারি?

হ্যাঁ, অনেক এয়ারলাইন্স এবং বুকিং প্ল্যাটফর্ম বিকাশ, রকেট, ভিসা এবং অন্যান্য জনপ্রিয় পেমেন্ট গেটওয়ের মতো মোবাইল ব্যাংকিং বিকল্পগুলির মাধ্যমে অর্থপ্রদান গ্রহণ করে।

👉আমার ফ্লাইট টিকেট কনফার্ম হয়েছে কিনা তা আমি কিভাবে জানব?

একবার আপনার পেমেন্ট প্রক্রিয়া হয়ে গেলে, আপনি এয়ারলাইন বা বুকিং প্ল্যাটফর্ম থেকে একটি নিশ্চিতকরণ ইমেল বা SMS পাবেন, যেখানে আপনার টিকিটের বিবরণ এবং বুকিং রেফারেন্স নম্বর থাকবে। আপনি অনলাইনে আপনার ফ্লাইট স্ট্যাটাস চেক করতে এই রেফারেন্স ব্যবহার করতে পারেন।

Next Post Previous Post